জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্যরা মতবিনিময়
মোঃ ইমদাদুল হক মিলনঃ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্যদের মতবিনিময় সভা আজ রবিবার ১৭ নভেম্বর দুপুরে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। এসময় কমিশনের সদস্য ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া, মোঃ হাফিজুর রহমান, ফিরোজ আহমেদ ও খোন্দকার মোহাম্মদ আমিনুর রহমান জনপ্রশাসন সংস্কারের করণীয় বিষয়ে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের মতামত মনোযোগ সহকারে শোনেন।
মতবিনিময়কালে কমিশনের সদস্যরা বলেন, জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন গড়তে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। আমরা এখন জাতীয় জীবনে যুগান্তকারী সময় পার করছি। সবার সঠিক সিদ্ধান্ত জাতিকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে। প্রশাসনকে কিভাবে রাজনীতির নেতিবাচক প্রভাব ও দুর্নীতি থেকে দূরে রাখা যায়, সে পথ আমাদেরকেই খুঁজে বের করতে হবে। এর আগেও অনেকবার জনপ্রশাসন সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে এবারের প্রেক্ষাপট আগের সময়ের চেয়ে ভিন্ন। সবার সাথে আলোচনার মাধ্যমে জনপ্রশাসন সংস্কারের দীর্ঘ-মধ্য-স্বল্প মেয়াদে সম্ভাব্য করণীয় নিয়ে প্রতিবেদন প্রস্তুত করে সরকারের হাতে তুলে দেয়া হবে।
মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, নাগরিকদের ক্ষমতায়ন হলে জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তোলা সহজ হবে। সরকারি চাকুরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনা এবং নিয়োগের পরে মানসম্মত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার। সরকারি দপ্তরের কর্মীদের সেবাপ্রত্যাশীদের প্রতি সহমর্মী, জনবান্ধব বা জনগণের বন্ধু হতে হবে। জনপ্রশাসনে দুর্নীতিকে কোনভাবে প্রশ্রয় দেয়া যাবে না এবং নাগরিকের পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো ও এর প্রতিকারের সুযোগ থাকতে হবে। নাগরিকসেবার সাথে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। তাই জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদগুলোর কাজের পরিসর ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। বর্তমান ব্যবস্থায় দেশের সকল কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু রাজধানী শহর ঢাকা। সেবাপ্রাপ্তি সহজ করতে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের বিকল্প নেই। একইসাথে প্রশাসনকে যে কোন মূল্যে রাজনীতির প্রভাব থেকে দূরে রাখতে হবে। আবার রাজনৈতিক সরকারও যেন প্রশাসন দ্বারা চালিত না হয় সেটিও নিশ্চিত করা আবশ্যক।
সভায় খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার দপ্তরের উপপরিচালক মোঃ ইউসুপ আলী, বীরমুক্তিযোদ্ধা, আইনজীবী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, নারী উদ্যোক্তা, প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র-নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর সদস্য, ব্যবসায়ী সংগঠন ও বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধি, শিক্ষক, সুশীল সমাজের সদস্য, সংস্কৃতিকর্মী ও এনজিও প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
বিকেলে একই স্থানে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্যরা মতবিনিময় করেন।